ঢাবির হল থেকে বিকৃত যৌনাচার, জন্মনিয়ন্ত্রণের সামগ্রী উদ্ধার

গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা’ সূর্য সেন হলের ছাত্রলীগের রুম থেকে ধারালো অস্ত্র, রিভলবার, বিকৃত যৌনাচারে ব্যবহৃত হ্যান্ডকাফ-লুব্রিকেন্ট-ব্লাইন্ড ফোল্ডসহ ৩২৪ প্যাকেট জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী কনডম উদ্ধার করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিকালে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করে শাহবাগ থানার পুলিশের কাছে জমা দেয় তারা।

এইদিন সূর্য সেন হলের শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের একক আধিপত্য বিস্তার করা রুমগুলোগে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেন এসব সামগ্রী। সূর্য সেন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমানের ৪৫০ নং রুম থেকে মদের বোতল ১৫ প্যাকেট কনডম, সূর্য সেন হল বিতর্ক ধারার সাবেক সভাপতির ৩২২নং রুম থেকে ১৩ প্যাকেট, ৩২৫ নং রুম থেকে ১৩০ প্যাকেট,৩৪৫ নং রুম থেকে ৬ প্যাকেট, ৩৫৫ নং রুম থেকে ১৬ প্যাকেট, ৩৪৪ নং রুম থেকে ১২ প্যাকেট, ৪১৭নং রুম থেকে ২২ প্যাকেট এবং নাম পরিচয়হীন এক লাগেজ থেকে ১১০ প্যাকেট সরকারি কনডম উদ্ধার করেছে ওই হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

হল বিতর্ক ধারার সাবেক সভাপতি এবং ঢাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তানভীর হাসান শান্তর রুম থেকে বিকৃত যৌনাচারে ব্যবহৃত হ্যান্ডকাফ, চোখ বাধার ব্লাইন্ড ফোল্ড, কনডম, লুব্রিকেন্ট ও মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তানভীর হাসান শান্ত নারীদের ব্ল্যাকমেইল ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। এর আগেও বিতর্ক ধারার নির্বাচন নিয়ে অনেক আলোচনা সমালোচনার স্বীকার হয়েছে সে।

এছাড়াও ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের রুম থেকে ২ বোতল ফেনসিডিল, তার অনুসারী মাহফুজুর রহমান, ছাত্রলীগ নেতা রাইসুল এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতার সাবিতের রুম থেকে ধারালো রামদা ও সাদ্দামের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা রাকিবের রুমে বিভিন্ন ব্রান্ডের মদের বোতল, ইনানের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা শামীমুলের ৪৪০ নং রুম থেকে লাইটার, ২৭২ নং রুম থেকে ইলেকট্রিক লাইটার ও অপারেশনে ব্যবহৃত সার্জিক্যাল ব্লেড পাওয়া গিয়েছে।

এ বিষয়ে সূর্যসেন হলের আবাসিক ছাত্র তৌহিদ হোসেন দ্যা ক্যাম্পাস পালস্ কে বলেন, হল ছাত্রলীগের নেতারা একদিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ চর্চার বয়ান দেয়, আরেকদিকে তারা রাজনৈতিক প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে দিনের পর দিন নানান ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছিলো। তারই প্রমাণ সূর্যসেন হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এখন অভিযান চালিয়ে বের করছে। তাদের রুমগুলোতে যেখানে শিক্ষা সামগ্রী থাকার কথা ছিলো, সেখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি তাদের রুমগুলো নানান ধরণের যৌন উত্তেজক দ্রব্য আর জন্মনিরোধকে ভর্তি। তাদের রুমে আমরা পাই দা, ছুরি, রামদাসহ নানান দেশীয় অস্ত্র। তারা তো নিজেদেরকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবেই দাবি করতো। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমি তাদের কাছে জিজ্ঞেস করতে চাই, তাদের রুমে যেসব জিনিসপত্র পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো আসলে শিক্ষাক্ষেত্রে কোন কাজে তারা ব্যবহার করতো, কি কাজ এসবের! তারা কি কলম বা পেন্সিলের পরিবর্তে রামদা দিয়ে লিখতো? নাকি রাবারের পরিবর্তে কনডমের ব্যবহার শুরু করে শিক্ষাক্ষেত্রে তারা বিপ্লব ঘটাতে চেয়েছিলো?

নাম প্রকাশ করা না শর্তে এ হলের এক হাউজটিউটর দ্যা ক্যাম্পাস পালস কে বলেন, এতদিন ছাত্রলীগের একক আধিপত্যের কারণে হল প্রশাসন সঠিকভাবে হলের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়। তবে এখন থেকে হলের কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে পরিচালিত হবে বলে বিশ্বাস করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *